নদীর ঘাটের কাছে
নৌকো বাঁধা আছে,
নাইতে যখন যাই, দেখি সে
জলের ঢেউয়ে নাচে।
আজ গিয়ে সেইখানে
দেখি দূরের পানে
মাঝনদীতে নৌকো, কোথায়
চলে ভাঁটার টানে।
জানি না কোন দেশে
পৌছে যাবে শেষে,
সেখানেতে কেমন মানুষ থাকে কেমন বেশে।
থাকি ঘরের কোণে,
সাধ জাগে মোর মনে,
অমনি করে যাই ভেসে, ভাই,
নতুন নগর বনে।
দূর সাগরের পারে,
জলের ধারে ধারে,
নারিকেলের বনগুলি সব
দাঁড়িয়ে সারে সারে।
পাহাড়-চূড়া সাজে
নীল আকাশের মাঝে,
বরফ ভেঙে ডিঙিয়ে যাওয়া
কেউ তা পারে না-যে।
কোন সে বনের তলে
নতুন ফুলে ফলে
নতুন নতুন পশু কত
বেড়ায় দলে দলে।
কত রাতের শেষে
নৌকো যে যায় ভেসে।
বাবা কেন আপিসে যায়,
যায় না নতুন দেশে?
ভাঁটা - চাঁদ ও সূর্যের শক্তির আকর্ষণে সমুদ্র বা নদীতে পানি বেড়ে যায়। একে বলে জোয়ার। এ পানি কমে যাওয়াকে বলা হয় ভাঁটা।
আপিস - অফিস শব্দের একটি কথ্য রূপ।
শিক্ষার্থীর অনুসন্ধিৎসা, কল্পনাশক্তি ও সৃজনশীলতা জাগ্রত করা।
কবিতাটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'সহজ পাঠ' গ্রন্থের প্রথম ভাগ থেকে নেওয়া হয়েছে। এ কবিতায় অজানাকে জানার সীমাহীন কৌতূহল এবং প্রকৃতির সকল রহস্য উন্মোচন করার অপার আকাঙ্ক্ষার কথা প্রকাশিত হয়েছে। ভাঁটার টানে ঘাটে বাঁধা নৌকা মাঝ নদী পেরিয়ে কোথায় গিয়ে যে পৌঁছবে তার কোনো ঠিক নেই। হয়তো কোনো নতুন দেশে বা নতুন পরিবেশে গিয়ে সে পৌঁছবে। এ সব প্রশ্নের উত্তর জানতে কৌতূহল জাগবে যে কারোরই। হয়তো কোনো অসীম সৌন্দর্য, অজানা আনন্দ বা অপার বিস্ময় তার জন্য অপেক্ষা করে আছে। অজানার প্রতি এই ব্যাকুলতা শিশুরা তার আশপাশের সবার মধ্যেও দেখতে চায়।
বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে বিশ্বসাহিত্যের অঙ্গনে সম্মানের আসনে অধিষ্ঠিত করে 'বিশ্বকবি' অভিধায় অভিহিত হন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১-১৯৪১)। তিনি জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বাড়ির মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও সারদা দেবীর চতুর্দশতম সন্তান।
আধুনিক বাংলা কবিতার ধারায় নতুন যুগের প্রবর্তক তিনি। পনেরো বছর বয়সে প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'বনফুল'। 'গীতাঞ্জলি' এবং তাঁর আরও কিছু কবিতার স্ব-অনূদিত কাব্যগ্রন্থ 'Song Offerings' -এর জন্য ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। 'মানসী', 'সোনার তরী', 'চিত্রা', 'ক্ষণিকা', 'বলাকা' তাঁর অন্যতম কাব্যগ্রন্থ। ছোটদের জন্য রচনা করেছেন 'শিশু', 'শিশু ভোলানাথ', 'খাপছাড়া' প্রভৃতি কাব্যগ্রন্থ।
বাংলা ছোটগল্প প্রথম তাঁর হাতেই প্রতিষ্ঠা লাভ করে। কবিতা, ছোটগল্প ছাড়াও উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ, সংগীত, ভ্রমণকাহিনি- বাংলা সাহিত্যের সকল শাখা তাঁর অঢেল দানে সমৃদ্ধ হয়েছে। ব্যাকরণ, ভাষাতত্ত্ব, ছন্দ ও চিত্রকলাতেও তিনি অসামান্য অবদান রেখেছেন।
অনন্যসাধারণ প্রতিভার অধিকারী রবীন্দ্রনাথ একাধারে সাহিত্যিক, চিন্তক, শিক্ষা-সংগঠক, সুরকার, গীতিকার, নাট্যকার, নাট্যপ্রযোজক, অভিনেতা, অনবদ্য চিত্রশিল্পী। এছাড়া তিনি 'শান্তিনিকেতন' ও 'বিশ্বভারতী'র মতো নতুন ধারার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।
ক. তোমার কল্পনার দেশের একটি বর্ণনা প্রস্তুত কর।
খ. তোমার এলাকার প্রাকৃতিক পরিবেশের বর্ণনা দাও।
গ. সর্বশেষ তুমি যে অঞ্চলে ভ্রমণ করেছ তার বর্ণনা লেখ।
১. জলের ধারে কী দাঁড়িয়ে আছে?
ক. নতুন নগর
খ. পাহাড় চূড়া
গ. নারিকেল বন
ঘ. নতুন পশু
২. "অমনি করে যাই ভেসে, ভাই/ নতুন নগর বনে।" -এখানে কী প্রকাশ পেয়েছে?
i. অসীম সৌন্দর্য
ii. অজানা আনন্দ
iii. অপার বিস্ময়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii
খ. ii ও iii
গ. i ও iii
ঘ. i, ii ও iii
উদ্দীপকটি পড়ে ৩ ও ৪ নং প্রশ্নের উত্তর দাও।
দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া
ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া
একটি ধানের শীষের উপরে
একটি শিশির বিন্দু।
৩. উদ্দীপকের সঙ্গে 'নতুন দেশ' কবিতার কোন দিকটি সাদৃশ্যপূর্ণ?
ক. সীমাহীন কৌতূহল
খ. প্রকৃতির রহস্য
গ. অজানাকে জানা
ঘ. অপার আকাঙ্ক্ষা
8. উক্ত দিকটি 'নতুন দেশ' কবিতার কোন অংশে প্রতিফলিত হয়েছে?
ক. জানি না কোন দেশে / পৌঁছে যাবে শেষে
খ. থাকি ঘরের কোণে / সাধ জাগে মোর মনে
গ. পাহাড়-চূড়া সাজে / নীল আকাশের মাঝে
ঘ. দূর সাগরের পারে / জলের ধারে ধারে
১. শীতের ছুটিতে বাবা-মায়ের সঙ্গে হৃদিতা বেড়াতে যায় সেন্টমার্টিন দ্বীপে। সেখানকার সামুদ্রিক প্রবাল, সারি সারি নারিকেল গাছ, মাছ ধরার বড়ো বড়ো নৌকা ওর মনে কৌতূহল জাগায়। দিগন্ত বিস্তৃত নীলাভজলরাশি, পরিষ্কার আকাশ ওকে নিয়ে যায় অন্য এক জগতে। ওর ইচ্ছে হয় সমুদ্রের নানা রঙের মাছের সঙ্গে খেলা করতে আবার কখনো বা আকাশে পাখি হয়ে উড়ে বেড়াতে।
ক. নীল আকাশের মাঝে কী সাজে?
খ. 'থাকি ঘরের কোণে' বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. হৃদিতার সেন্টমার্টিনে দেখা দৃশ্যে 'নতুন দেশ' কবিতায় চিত্রিত কোন দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে? -ব্যাখ্যা কর।
ঘ. "উদ্দীপকটি যেন 'নতুন দেশ' কবিতার মূলভাবকে ধারণ করে আছে।"- উক্তিটির যথার্থতা মূল্যায়ন কর।
দেখিনু সেদিন রেলে,
কুলি বলে এক বাবু সাব তারে ঠেলে দিলে নিচে ফেলে!
চোখ ফেটে এল জল,
এমনি করে কি জগৎ জুড়িয়া মার খাবে দুর্বল?
যে দধীচিদের হাড় দিয়ে ঐ বাষ্প-শকট চলে,
বাবু সাব এসে চড়িল তাহাতে, কুলিরা পড়িল তলে।
বেতন দিয়াছ? চুপ রও যত মিথ্যাবাদীর দল!
কত পাই দিয়ে কুলিদের তুই কত ক্রোর পেলি বল!
রাজপথে তব চলিছে মোটর, সাগরে জাহাজ চলে,
রেলপথে চলে বাষ্প-শকট, দেশ ছেয়ে গেল কলে,
বল তো এসব কাহাদের দান! তোমার অট্টালিকা
কার খুনে রাঙা? ঠুলি খুলে দেখ, প্রতি ইটে আছে লিখা।
তুমি জান নাকো, কিন্তু পথের প্রতি ধূলিকণা জানে
ঐ পথ, ঐ জাহাজ, শকট, অট্টালিকার মানে!
আসিতেছে শুভদিন,
দিনে দিনে বহু বাড়িয়াছে দেনা, শুধিতে হইবে ঋণ!
হাতুড়ি শাবল গাঁইতি চালায়ে ভাঙিল যারা পাহাড়,
পাহাড়-কাটা সে পথের দু-পাশে পড়িয়া যাদের হাড়,
তোমারে সেবিতে হইল যাহারা মজুর, মুটে ও কুলি,
তোমারে বহিতে যারা পবিত্র অঙ্গে লাগাল ধূলি;
তারাই মানুষ, তারাই দেবতা, গাহি তাহাদেরি গান,
তাদেরি ব্যথিত বক্ষে পা ফেলে আসে নব উত্থান!
(অংশবিশেষ)
দধীচি - ভারতীয় পুরাণে উল্লেখিত একজন ত্যাগী মুনি। এ কবিতায় শ্রমজীবী কুলি-মজুরদের দধীচিমুনির সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। যে শ্রমজীবী মানুষেরা সভ্যতার বিস্তারে শ্রম দিয়ে সাহায্য করেছেন তারাই আজ অবহেলিত। তাদের শ্রমের ওপর ভর করে যারা ধনী হয়েছেন, তারাই সকল সুবিধাভোগী। কবি দুঃখ করে ত্যাগী দধীচির সঙ্গে ত্যাগী কুলি-মজুরের তুলনা করেছেন।
বাষ্প-শকট - 'শকট' মানে গাড়ি। বাষ্প-শকট হচ্ছে বাষ্প দ্বারা চালিত গাড়ি। এখানে রেলগাড়ি।
পাই - আগের দিনের মুদ্রার ক্ষুদ্র একক বিশেষ। এ কবিতায় 'পাই' বলতে কুলি-মজুরদের মজুরির 'স্বল্পতা' বোঝানো হয়েছে।
ক্রোর - কোটি।
ঠুলি - চোখের ওপরের ঢাকনি। গরুকে যখন ঘানিতে জোড়া হতো, তখন তার চোখে ঢাকনি পরানো হতো। ঐ ঢাকনির নাম 'তুলি'। 'ঠুলি খুলে' মানে সচেতন হয়ে।
অট্টালিকা - প্রাসাদ, অন্য কথায় সুউচ্চ দালান বা ইমারত।
'দিনে দিনে বহু
বাড়িয়াছে দেনা' - অতীতকাল থেকে মানব সভ্যতা শ্রমজীবী মানুষদের অবদানে অগ্রসর হয়েছে, কিন্তু প্রতিদানে তাঁরা পেয়েছেন অল্পই।
শাবল - লোহার তৈরি মাটি খোঁড়ার হাতিয়ার।
গাঁইতি - পাথর, ইট প্রভৃতি দ্বারা নির্মিত কঠিন স্থান খোঁড়ার জন্য লাঙ্গলের আকারের দুমুখো কুড়াল।
বক্ষে - বুকে।
নব উত্থান - কোনো ভালো কাজের জন্য নতুন করে উদ্যোগী হওয়া।
বিভিন্ন পেশার শ্রমজীবী মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ জাগ্রত করা।
কবিতাটি কাজী নজরুল ইসলামের 'সাম্যবাদী' কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত। 'কুলি-মজুর' কবিতায় কবি মানবসভ্যতার যথার্থ রূপকার শ্রমজীবী মানুষের অধিকারের পক্ষে কলম ধরেছেন।
যুগ যুগ ধরে কুলি-মজুরের মতো লক্ষকোটি শ্রমজীবী মানুষের হাতে গড়ে উঠেছে মানবসভ্যতা। এদেরই অক্লান্ত শ্রমে ও ঘামে মোটর, জাহাজ, রেলগাড়ি চলছে। গড়ে উঠেছে দালানকোঠা, কলকারখানা। এদের শোষণ করেই ধনিকশ্রেণি হয়েছে বিত্ত-সম্পদের মালিক। কিন্তু যুগ যুগ ধরে সমাজে এই কুলি-মজুররাই সবচেয়ে বঞ্চিত ও উপেক্ষিত। এক শ্রেণির হৃদয়হীন স্বার্থান্ধ মানুষ এদের শ্রমের বিনিময়ে পাওয়া বিত্ত-সম্পদের সবটুকুই ভোগ করছে, অথচ এদের তারা মানুষ হিসেবে গণ্য করতেও নারাজ।
অন্যায়, শোষণ ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ, বিপ্লব ও দেশপ্রেমের উদ্দীপনাময় কবিতা লিখে বাংলার জনমনে যিনি বিদ্রোহী কবি হিসেবে নন্দিত আসন পেয়েছেন, তিনি কবি কাজী নজরুল ইসলাম।
বহু বিচিত্র ও বিস্ময়কর তাঁর জীবন। ছেলেবেলায় লেটোর দলে গান করেছেন, রুটির দোকানের কারিগর হয়েছেন, যুদ্ধে যোগ দিয়ে সেনাবাহিনীর হাবিলদার হয়েছেন। ব্রিটিশরাজের বিরুদ্ধে লেখালেখির কারণে রাজদ্রোহের অপরাধে কারাবরণ করেছেন। তিনি পত্রিকাও সম্পাদনা করেছেন। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ, সংগীত প্রভৃতি ক্ষেত্রে তিনি উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন।
তিনি যে শুধু বড়োদের জন্য লিখেছেন তা নয়, ছোটোদের জন্য লেখা তাঁর কাব্যগ্রন্থ হচ্ছে- 'ঝিঙেফুল', 'সঞ্চয়ন', 'পিলে পটকা', 'ঘুম জাগানো পাখি', 'ঘুম পাড়ানি মাসিপিসি' এবং নাটক 'পুতুলের বিয়ে'।
নজরুলের কবিতা ও গান বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। তাঁর রচিত 'সন্ধ্যা' গ্রন্থের অন্তর্গত 'চল্ চল্ চল্' গানটি আমাদের রণ-সংগীত। তিনি বাংলাদেশের জাতীয় কবি।
নজরুলের জন্ম ১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৪শে মে (১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ই জ্যৈষ্ঠ) বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে।
তিনি ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দের ২৯শে আগস্ট (১৩৮৩ বঙ্গাব্দের ১২ই ভাদ্র) ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
ক. তোমার দেখা বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের একটি তালিকা প্রণয়ন কর (দলীয় কাজ)।
খ. তোমার দেখা একজন শ্রমজীবী মানুষের জীবন-যাপনের উপর একটি বিবরণী লেখ (একক কাজ)।
১. কাজী নজরুল ইসলামের মতে কোনটিতে দেশ ছেয়ে গেল?
ক. মোটরে
খ. জাহাজে
গ. কলে
ঘ. রেলগাড়িতে
২. 'কুলি-মজুর' কবিতায় কবি শ্রমজীবীদের জয়গান গেয়েছেন কারণ তারা -
i. অবহেলিত
ii. সভ্যতার নির্মাতা
iii. অধিকারবঞ্চিত
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. iও ii
খ. iও iii
গ. ii ও iii
ঘ. i, ii ও iii
নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ৩ ও ৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও:
বর্বর বলি যাহাদের গালি পাড়িল ক্ষুদ্রমনা, কূপমণ্ডুক 'অসংযমীর' আখ্যা দিয়াছে যারে, তারি তরে ভাই গান রচে যাই, বন্দনা করি তারে।
৩. কবিতাংশের 'ক্ষুদ্রমনা' 'কুলি-মজুর' কবিতায় বর্ণিত কোন অংশের প্রতিনিধিত্ব করে?
ক. বাবুসাবদের
খ. মিথ্যাবাদীদের
গ. দধীচিদের
ঘ. কুলি-মজুরদের
8. কবিতাংশের মূলভাব 'কুলি-মজুর' কবিতার কোন চরণে প্রতিফলিত হয়েছে?
ক. দিনে দিনে বহু বাড়িয়াছে দেনা, শুধিতে হইবে ঋণ
খ. তারাই মানুষ, তারাই দেবতা, গাহি তাহাদেরি গান
গ. তাদেরই ব্যথিত বক্ষে পা ফেলে আসে নব উত্থান
ঘ. তোমারে বহিতে যারা পবিত্র অঙ্গে লাগাল ধূলি
১। এলাকায় একজন ভালো মানুষ হিসেবে চেয়ারম্যান আজমল সাহেবের যথেষ্ট সুনাম রয়েছে, কিন্তু তাঁর ছেলে কারণে-অকারণে বাড়ির কাজের লোক, আশপাশের খেটে খাওয়া মানুষের সাথে খারাপ আচরণ করে, তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে। চেয়ারম্যান ছেলেকে ডেকে বুঝিয়ে বলেন, তুমি যাদের আজ তুচ্ছ জ্ঞান করছ সত্যিকার অর্থে - তারাই আধুনিক সভ্যতার নির্মাতা, তাদের কারণেই আমরা সুন্দর জীবন যাপন করছি।
ক. 'কুলি-মজুর' কবিতায় রেলপথে কোনটি চলে?
খ. 'শুধিতে হইবে ঋণ'- কথাটির দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
গ. চেয়ারম্যান সাহেবের ছেলের আচরণে 'কুলি-মজুর' কবিতার কোন দিকটি প্রকাশ পেয়েছে- ব্যাখ্যা কর।
ঘ. 'চেয়ারম্যান সাহেবের মনোভাব 'কুলি-মজুর' কবিতার মূলভাবেরই প্রতিফলন' বিশ্লেষণ কর।
আমার বাড়ি যাইও ভোমর,
বসতে দেব পিঁড়ে,
জলপান যে করতে দেব
শালি ধানের চিঁড়ে।
শালি ধানের চিঁড়ে দেব,
বিন্নি ধানের খই,
বাড়ির গাছের কবরী কলা,
গামছা-বাঁধা দই।
আম-কাঁঠালের বনের ধারে
শুয়ো আঁচল পাতি,
গাছের শাখা দুলিয়ে বাতাস
করব সারা রাতি।
চাঁদমুখে তোর চাঁদের চুমো
মাখিয়ে দেব সুখে,
তারা ফুলের মালা গাঁথি,
জড়িয়ে দেব বুকে।
গাই দোহনের শব্দ শুনি
জেগো সকাল বেলা,
সারাটা দিন তোমায় লয়ে
করব আমি খেলা।
আমার বাড়ি ডালিম গাছে
ডালিম ফুলের হাসি,
কাজলা দিঘির কাজল জলে
হাঁসগুলি যায় ভাসি।
আমার বাড়ি যাইও ভোমর,
এই বরাবর পথ,
মৌরি ফুলের গন্ধ শুঁকে
থামিও তব রথ।
ভোমর - মৌমাছি। ভ্রমরের কথ্য রূপ ভোমর। কবিতাটিতে কোনো বন্ধু বা প্রিয়জনকে ভোমর বলে সম্বোধন করে নিজের বাড়িতে আসার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
শালি ধান - এক প্রকার আমন ধান, যা হেমন্তকালে উৎপন্ন হয়।
বিন্নি ধান - বাংলাদেশের আদি জাতের ধানগুলোর একটি।
কবরী কলা - স্বাদের জন্য বিখ্যাত এক প্রকার কলা।
'গামছা-বাঁধা দই' - অধিক ঘনত্বের ফলে যে দই গামছায় রাখলেও রস গড়িয়ে পড়ে না।
'শুয়ো আঁচল পাতি' - আঁচল পেতে শুয়ে থেকো।
'গাই দোহনের শব্দ' - গাভীর দুধ দোহনের শব্দ।
কাজলা দিঘি - কাজলের মতো কালো জলের দিঘি।
শিক্ষার্থীদের সৌজন্য, শিষ্টাচার ও মানবপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করা। গ্রামীণ জীবনের সৌন্দর্য বিষয়ে সচেতন করা।
কবিতাটি কবি জসীমউদ্দীনের 'হাসু' কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত। এখানে কোনো বন্ধু বা প্রিয়জনকে নিজের গ্রামের বাড়িতে নিমন্ত্রণ করেছেন কবি। তিনি তাকে আপ্যায়ন করতে চান শালি ধানের চিড়া, বিন্নি ধানের খই, কবরী কলা এবং গামছা বাঁধা দই দিয়ে। প্রকৃতির সান্নিধ্যে কেমন করে অতিথির প্রাণ জুড়াবে তারও এক নিবিড় পরিচয় আছে কবিতাটিতে। যুগ যুগ ধরেই অতিথি আপ্যায়নে বাঙালির সুনাম রয়েছে। অতিথির বিশ্রাম ও আনন্দের জন্য গৃহস্থের আন্তরিক প্রয়াস এ কবিতায় বিশেষভাবে লক্ষণীয়। অতিথি যে গৃহে এসেছেন সেই গৃহের গাছ, ফুল, পাখিও যেন অতিথিকে আপ্যায়নে উন্মুখ হয়ে আছে। অতিথিকে ভালোবাসার মধ্য দিয়ে সৌজন্য, শিষ্টাচার ও মানবপ্রেমের অসাধারণ বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে এ কবিতায়।
কবি জসীমউদ্দীন ১৯০৩ খ্রিষ্টাব্দে ফরিদপুর জেলার তাম্বুলখানা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর কবিতায় আমরা পল্লির মানুষ ও প্রকৃতির সহজ-সুন্দর রূপটি দেখতে পাই। পল্লির মাটি ও মানুষের সঙ্গে তাঁর কবিহৃদয় যেন এক হয়ে মিশে আছে। তাঁর উল্লেখযোগ্য কাহিনিকাব্য: 'নক্সী কাঁথার মাঠ', 'সোজন বাদিয়ার ঘাট'; কাব্যগ্রন্থ: 'রাখালী', 'বালুচর', 'মাটির কান্না'; নাটক 'বেদের মেয়ে'। তাঁর শিশুতোষ গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে 'হাসু', 'এক পয়সার বাঁশী', 'ডালিমকুমার'। ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
ক. তোমার বাড়িতে অতিথি এলে কীভাবে তাঁর যত্ন নেওয়া হয়, বর্ণনা কর (একক কাজ)।
খ. বাংলাদেশের প্রসিদ্ধ ও ঐতিহ্যবাহী খাবারসমূহের (অঞ্চলভিত্তিক) তালিকা তৈরি কর (দলীয় কাজ)।
১. 'আমার বাড়ি' কবিতায় কবি বন্ধুকে কোন ধানের চিঁড়া খেতে দিবেন?
ক. শালি
খ. আমন
গ. বোরো
ঘ. বিন্নি
২. 'থামিও তব রথ' দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
ক. যাত্রাবিরতি
খ. রথ দেখা
গ. গন্তব্যে পৌঁছানো
ঘ. রথ চালনা
কবিতাংশটি পড়ে ৩ ও ৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও:
আয় ছেলেরা আয় মেয়েরা
ফুল তুলিতে যাই -
ফুলের মালা গলায় দিয়ে
মামার বাড়ি যাই
ঝড়ের দিনে মামার দেশে
আম কুড়োতে সুখ,
পাকা জামের শাখায় উঠি
রঙিন করি মুখ।
৩. উদ্ধৃতির প্রথম স্তবকের সাথে নিচের কোন চরণের মিল লক্ষ করা যায়-
i. আমার বাড়ি যাইও ভোমর/ বসতে দেব পিঁড়ে।
ii. গাছের শাখা দুলিয়ে বাতাস / করব সারা রাতি।
iii. তারা ফুলের মালা গাঁথি / জড়িয়ে দেব বুকে।
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii
খ. iও iii
গ. ii ও iii
ঘ. i, ii ও iii
8. উদ্ধৃতির দ্বিতীয় স্তবকের সাথে 'আমার বাড়ি' কবিতার মিল কোথায়?
ক. প্রকৃতিতে
খ. নিমন্ত্রণে
গ. খাদ্য-বর্ণনায়
ঘ. বন্ধুত্বে
১. তুমি যাবে ভাই- যাবে মোর সাথে, আমাদের ছোট গাঁয়,
গাছের ছায়ায় লতায় পাতায় উদাসী বনের বায়,
মায়া মমতায় জড়াজড়ি করি
মোর গেহখানি রহিয়াছে ভরি
মায়ের বুকেতে, বোনের আদরে, ভায়ের স্নেহের ছায়।
ক. 'আমার বাড়ি' কবিতায় কাজলা দিঘির কাজল জলে কী হাসে?
খ. 'আমার বাড়ি' কবিতায় কবি বন্ধুকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন কেন?
গ. উদ্দীপকের প্রথম চরণের সাথে 'আমার বাড়ি' কবিতার কোন অংশের মিল আছে?-ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপক ও 'আমার বাড়ি' কবিতার ভাবার্থ কি এক?-বিশ্লেষণ কর।
জল বারে জল ঝরে সারাদিন সারারাত -
অফুরান নামতায় বাদলের ধারাপাত।
আকাশের মুখ ঢাকা, ধোঁয়ামাখা চারিধার,
পৃথিবীর ছাত পিটে বামাঝম্ বারিধার।
স্নান করে গাছপালা প্রাণখোলা বরষায়,
নদীনালা ঘোলাজল ভরে উঠে ভরসায়।
উৎসব ঘনঘোর উন্মাদ শ্রাবণের
শেষ নাই শেষ নাই বরষার প্লাবনের।
জলেজলে জলময় দশদিক টলমল্
অবিরাম একই গান, ঢালো জল, ঢালো জল।
ধুয়ে যায় যত তাপ জর্জর গ্রীষ্মের,
ধুয়ে যায় রৌদ্রের স্মৃতিটুকু বিশ্বের।
শুধু যেন বাজে কোথা নিঃঝুম ধুকধুক,
ধরণীর আশাভয় ধরণীর সুখদুখ।
'অফুরান নামতায়
বাদলের ধারাপাত' - গণিতে 'নামতা' বলতে বোঝায় গুণ করার ধারাবাহিক তালিকা; আর 'ধারাপাত' হলো অঙ্ক শেখার প্রাথমিক বই। এ কবিতায় বৃষ্টিধারার পতনকে বলা হচ্ছে ধারাপাত; বৃষ্টির পতনের অবিরাম রিমঝিম ধ্বনি অনেকটা যেন শিশুদের নামতা পড়ার শব্দের মতো।
ছাত - ছাদ। ছাদের কথ্য রূপ।
বারিধার - জলের ধারা।
উন্মাদ - উন্মত্ত, ক্ষিপ্ত। শ্রাবণ মাসে অবিরাম ধারা বর্ষণ ঘটে বলে কবি এখানে শ্রাবণকে 'উন্মাদ শ্রাবণ' বলেছেন।
জর্জর - কাতর।
নিঃঝুম - নিঝুম, নীরব, নিঃশব্দ।
"শ্রাবণে” কবিতাটি সুকুমার রায়ের 'খাই খাই' ছড়াগ্রন্থের অন্তর্গত। গ্রীষ্মের দাবদাহে জর্জরিত প্রকৃতি অবিরাম বর্ষায় স্নান করে সজীব ও প্রাণবন্ত রূপ ধারণ করেছে, কবিতায় সে ছবিই আঁকা হয়েছে। বর্ষার জলে গাছপালা নদী-নালা থেকে শুরু করে রুক্ষ প্রকৃতি মুহূর্তেই জলে পরিপূর্ণ হয়। প্রকৃতিতে প্রাণের সঞ্চার ঘটে। গ্রীষ্মকালের রোদের চিহ্ন ধুয়ে মুছে প্রকৃতি এ সময় নতুন রূপ ধারণ করে। এভাবেই ঋতুর পালাবদলের মতো মানব-মনের আশা-আকাঙ্ক্ষা, সুখ-দুঃখের পালাবদল ঘটে।
শিশু-কিশোর পাঠকদের কাছে সুকুমার রায় একটি প্রিয় নাম। তাঁর আদি পৈতৃক নিবাস ময়মনসিংহ জেলায়। বাংলা সাহিত্যে তিনি অমর হয়ে আছেন প্রধানত রসের কবিতা, হাসির গল্প, নাটক ইত্যাদি শিশুতোষ রচনার জন্য। 'আবোল তাবোল', 'হযবরল', 'পাগলা দাশু' প্রভৃতি তাঁর অতুলনীয় রচনা। তাঁর পিতা উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী একজন বিখ্যাত শিশুসাহিত্যিক। কিংবদন্তি চলচ্চিত্র-নির্মাতা ও খ্যাতিমান সাহিত্যিক সত্যজিৎ রায় তাঁর পুত্র। সুকুমার রায়ের জন্ম কলকাতায় ১৮৮৭ খ্রিষ্টাব্দে এবং মৃত্যু ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দে।
ক. শ্রাবণ মাসে তোমার এলাকায় কী কী পরিবর্তন ঘটে? লিখ।
খ. বর্ষার গান ও কবিতা নিয়ে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন কর।
১. শ্রাবণের জল অবিরাম ঝরে-
ক. সংগীতের মতো
খ. কোলাহলের মতো
গ. গণিতের মতো
ঘ. নামতার মতো
২. 'অবিরাম একই গান' বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
ক. বর্ষার প্লাবন
খ. নদীর ঘোলাজল
গ. একটানা বৃষ্টি
ঘ. সংগীত সন্ধ্যা
৩. বর্ষণমুখর দিনে অরণ্যের কেয়া শিহরায়, রৌদ্র-দগ্ধ ধানক্ষেত আজ তার স্পর্শ পেতে চায়,
উদ্দীপকটি 'শ্রাবণে' কবিতার কোন দিকটির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ?
ক. অবিরাম বৃষ্টি
খ. মেঘলা আকাশ
গ. বৃষ্টিস্নাত প্রকৃতি
ঘ. তাপ ধুয়ে যাওয়া
8. 'বৃষ্টি এল কাশবনে জাগল সাড়া ঘাসবনে'
উদ্দীপকের ভাবধারা 'শ্রাবণে' কবিতার কোন পঙ্ক্তিতে প্রতিফলিত হয়েছে?
ক. অফুরান নামতায় বাদলের ধারাপাত
খ. আকাশের মুখ ঢাকা, ধোঁয়ামাখা চারিধার
গ. স্নান করে গাছপালা প্রাণখোলা বরষায়
ঘ. নদীনালা ঘোলাজল ভরে উঠে ভরসায়
উদ্দীপক (১) আজিকার রোদ ঘুমায়ে পড়িছে- ঘোলাটে মেঘের আড়ে, কেয়া বন পথে স্বপন বুনিছে- ছল ছল জলধারে। কাহার ঝিয়ারী কদম্ব শাখে- নিঝুম নিরালায়, ছোট ছোট রেণু খুলিয়া দিয়াছে- অস্ফুট কলিকায়।
উদ্দীপক(২) কেউবা রঙিন কাঁথায় মেলিয়া বুকের স্বপনখানি, তারে ভাষা দেয় দীঘল সুতার মায়াবী আখর টানি।
ক. প্রাণখোলা বর্ষায় কে স্নান করে?
খ. 'উন্মাদ শ্রাবণ' বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. ১ম উদ্দীপকে 'শ্রাবণে' কবিতায় বর্ণিত বর্ষার কোন দিকটি চিত্রিত হয়েছে? বর্ণনা কর।
ঘ. ২য় উদ্দীপকটি 'শ্রাবণে' কবিতার শেষ চরণে প্রতিফলিত হয়েছে কি? যুক্তিসহ বিচার কর।
ওরে আমার মা-জননী
জন্মভূমি বাঙলারে
তোর মত আর পুণ্যবতী
ভাগ্যবতী বল মা কে ॥
কার চোখে মা নদীর কাজল
সবুজ তৃণের আঁচল বুকে
কার পায়ে মা ধুলোর নূপুর
সন্ধ্যা দুপুর বেজেই চলে।
রোজ ভোরে কে শিশির খোঁপায়
বকুল যুথীর গন্ধ মাখে
কার দুপুরের তন্দ্রা ভেজে
ক্লান্ত ঘুঘুর বিলাপ-জলে ॥
কামার কুমোর জেলে চাষী
বাউল মাঝি ঘর-উদাসী,
কার ছেলেরা নিত্য হাজার
মরণ-মারের দণ্ড গোনে,
ছেলের বুকের খুন ছোপানো
কোন্ জননীর আঁচল-কোণে
দুর্ভাগিনী কার মেয়েরা
কান্নাফুলের নকশা বোনে ॥
সেই মাকে যার হাজার হাজার
মা-নাম-ডাকা পাগল ছেলে
মায়ের নামে ঝাঁপিয়ে পড়ে
ভয়ঙ্করের দুর্বিপাকে।
কার ছেলে মা উপড়ে ফ্যালে
বুলেট ফাঁসির শাসন-কারা
দুখের ধূপে সুখ পুড়িয়ে
কার ছেলে মুখ উজল রাখে ॥
তুই তো সে-মা ও মা
তুই তো রে সেই গরবিনী
রক্তে-ধোওয়া সরোজিনী
যুগ-চেতনার চিত্তভূমি
নিত্যভূমি বাঙলারে ।
(অংশবিশেষ)
পুণ্যবতী - পুণ্য বা ভালো কাজ করেন এমন নারী।
সরোজিনী - সরোজ মানে পদ্ম সরোজের স্ত্রীবাচক রূপ সরোজিনী। এ কবিতায় দেশমাতৃকা বাংলাকে তুলনা করা হয়েছে কমনীয় পদ্মের সঙ্গে।
'মরণ-মারের দণ্ড' - মরণের আঘাত থেকে প্রাপ্ত শাস্তি।
ছোপানো - ছোপ মানে ছাপ, রঙ। এখানে ছোপানো মানে রাঙানো।
পাগল ছেলে - বাংলার মুক্তিকামী বিদ্রোহী ও তরুণ-যুবকেরাই 'পাগল ছেলে' যারা নির্ভয়ে যুদ্ধে-সংগ্রামে লিপ্ত হয়েছিল।
'ভয়ঙ্করের দুর্বিপাকে' - ভীতিকর দুর্যোগ ও দুর্ঘটনা। এখানে ভয়াবহ ও রক্তক্ষয়ী যুদ্ধকে বোঝানো হয়েছে।
শাসন-কারা - পাকিস্তানি দুঃশাসন- যা ছিল কারাগারের সমান।
উজল - উজ্জ্বল শব্দটির কোমল রূপ।
'যুগ-চেতনার চিত্তভূমি / নিত্যভূমি বাঙলারে' -যুগের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করা চিরন্তন দেশমাতৃকা বাংলাদেশ।
কবিতাটি 'বাঙলা ছাড়ো' কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত। উপর্যুক্ত কবিতাটিতে পুণ্যবতী ভাগ্যবতী দেশমাতার গর্বিত হয়ে ওঠার কারণ অন্বেষণ করা হয়েছে। বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক জীবনের সঙ্গে পরিবেশ-প্রকৃতির সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। শ্রমজীবী, কৃষিজীবী থেকে শুরু করে সব পেশাজীবী সন্তান এই মায়ের কোল জুড়ে থাকে। এই মাকে রক্ষা করার জন্য এই সন্তানরা শত কষ্ট সহ্য করে, তবে কোনো অন্যায়, অত্যাচার, অবিচারকে তাঁরা মেনে নিতে পারে না। মাকে বাঁচানোর জন্য প্রয়োজনে তাঁরা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিতেও দ্বিধা করে না। আবার এই মাকেও সন্তানের জন্য বিশেষ ভূমিকা রাখতে হয়। সন্তানকে সাহস ও শক্তি জোগাতে হয়। দেশমাতৃকাকে সকল দুঃশাসন থেকে রক্ষার জন্য মায়ের সন্তানরা ঝাঁপিয়ে পড়ে। তাঁরা যে কোনো দুঃসময়ে জেল জুলুম ফাঁসির দণ্ড মাথায় নিয়ে নিজের সুখ শান্তি ও আলস্য পরিহার করে দেশের জন্য আত্মত্যাগ করতে দ্বিধা করে না। যুগের দাবি ও সময়ের দাবি রক্ষায় যে সন্তানরা সাহসের সাথে সংগ্রামের পথ বেছে নেয়, তাঁদের জন্য বাংলাদেশ সত্যিই গর্বিত। প্রকৃতপক্ষে বাংলার মাটি এই সাহসী ও সংগ্রামী জনতার ভিত্তিভূমি।
সিকান্দার আবু জাফর বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট কবি, নাট্যকার ও সাংবাদিক। জন্মেছেন সাতক্ষীরা জেলায়। জন্মসাল ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দ। পাকিস্তানি শাসন ও শোষণের বিরুদ্ধে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। 'প্রসন্ন প্রহর', 'তিমিরান্তিক', 'বাঙলা ছাড়ো' প্রভৃতি তাঁর কাব্যগ্রন্থ। 'সিরাজ-উ-দ্দৌলা' তাঁর বিখ্যাত নাটক। তিনি মৃত্যুবরণ করেন ১৯৭৫ সালে।
ক. দেশপ্রেমমূলক কবিতা আবৃত্তি অনুষ্ঠানের আয়োজন কর (দলগত কাজ)।
খ. পূর্ববর্তী কোনো শ্রেণিতে পড়া ভালোলাগা কোনো স্বদেশপ্রেমের কবিতা সম্বন্ধে তোমার অনুভূতি লিখ।
১. মায়ের আঁচল কোণে কী লেগে আছে?
ক. বকুল যুথীর গন্ধ
খ. কান্না ফুলের নকশা
গ. ছেলের বুকের খুন
ঘ. সবুজ তৃণ
২. 'গরবিনী মা-জননী' কবিতায় 'দুর্ভাগিনী মেয়ে' বলে কাদের বোঝানো হয়েছে?
ক. বাংলার অবহেলিত মেয়েদের
খ. বাংলার গ্রামীণ মেয়েদের
গ. দুর্ভাগ্য জর্জরিত মেয়েদের
ঘ. যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত মেয়েদের
৩.
আমরা অপমান সইব না
ভীরুর মত ঘরের কোণে রইব না
আমরা আকাশ থেকে বজ্র হয়ে বঝারতে জানি
তোমার ভয় নেই মা
আমরা প্রতিবাদ করতে জানি।
উদ্দীপকের চেতনা নিচের যে চরণে বিদ্যমান -
ক. কার ছেলেরা নিত্য হাজার মরণ-মারের দণ্ড গোনে
খ. ছেলের বুকের খুন ছোপানো কোন জননীর আঁচল কোণে
গ. মায়ের নামে ঝাঁপিয়ে পড়ে ভয়ঙ্করের দুর্বিপাকে
ঘ. দুখের ধূপে সুখ পুড়িয়ে কার ছেলে মুখ উজল রাখে
৪।
এক সাগর রক্তের বিনিময়ে
বাংলার স্বাধীনতা আনল যারা
আমরা তোমাদের ভুলব না।
- উদ্দীপকে 'গরবিনী মা জননী' কবিতায় উল্লিখিত বাঙালি সন্তানের কোন দিকটির প্রতিফলন ঘটেছে?
ক. সংগ্রামের
খ. গর্বের
গ. প্রতিবাদের
ঘ. আত্মত্যাগের
মা দিবসে রত্নগর্ভা স্বীকৃত মায়েদের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সাহেদা বেগমের বড় ছেলে সাজিদ অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন- আমাদের মা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মা। আমরা পিঠাপিঠি পাঁচ ভাই-বোন যখন খুব ছোটো, তখনই বাবাকে হারালাম। মাকে কখনো ভেঙে পড়তে দেখিনি। দুঃখ-দারিদ্র্য-অভাব আমাদের নিত্য সঙ্গী ছিল। মা সব সময় আমাদেরকে খুশি রেখে, পড়াশুনা শিখিয়ে মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছেন। তোমাকে শত সালাম মা। তোমার মুখের হাসির জন্য আমরা যে কোনো ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত।
ক. সন্ধ্যা দুপুর মার পায়ে কী বাজে?
খ. 'রক্তে ধোওয়া সরোজিনী' বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. সাজিদের মাধ্যমে 'গরবিনী মা-জননী' কবিতার কোন বিশেষ দিকটি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে? -ব্যাখ্যা কর।
ঘ. "প্রেক্ষাপট ভিন্ন হলেও উদ্দীপক ও 'গরবিনী মা-জননী' কবিতার বক্তব্য একই ধারায় প্রবাহিত।"-বিশ্লেষণ কর।
শতেকের সাথে শতেক হস্ত
মিলায়ে একত্রিত
সব দেশে সব কালে কালে সবে
হয়েছে সমুন্নত।
বিপুলা পৃথিবী, প্রসারিত পথ,
যাত্রীরা সেই পথে,
চলে কর্মের আহ্বানে কোন
অনন্ত কাল হতে
মানব জীবন! শ্রেষ্ঠ, কঠোর
কর্মে সে মহীয়ান,
সংগ্রামে আর সাহসে প্রজ্ঞা
আলোকে দীপ্তিমান।
পায়ের তলার মাটিতে, আকাশে,
সমুখে, সিন্ধু জলে
বিজয় কেতন উড়ায়ে মানুষ
চলিয়াছে দলে দলে।
(অংশবিশেষ)
শতেক - একশত
সমুন্নত - অতিশয় উঁচু।
বিপুল - বিশাল।
প্রসারিত - বিস্তার লাভ করেছে এমন।
অনন্ত - যার অন্ত বা শেষ নেই।
মহীয়ান - সুমহান।
সংগ্রাম - লড়াই।
প্রজ্ঞা - গভীর জ্ঞান।
দীপ্তিমান - উজ্জ্বল।
সিন্ধু - সমুদ্র, সাগর।
কেতন - পতাকা।
ধর্ম-বর্ণ-গোত্র-শ্রেণি নির্বিশেষে সকল মানুষের প্রতি সম্প্রীতি ও সহমর্মিতার বোধ সৃষ্টি করা।
'সাম্য' কবিতাটি 'নওল কিশোরের দরবারে' গ্রন্থভুক্ত 'মিলিত সেবা ও সাম্য প্রীতিতে' কবিতার অংশবিশেষ। কোনো বড়ো কাজ কেউ একা করতে পারে না। সে জন্য দরকার হয় অনেক মানুষের মিলিত অংশগ্রহণ। সকলকে নিয়ে কাজ করার মাধ্যমে পৃথিবীর বহু দেশ উন্নত হয়েছে। পৃথিবীর অনেক মহৎ কাজের পেছনেই ছিল মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টা। অসীম সাহস, সম্মিলিত সাধনা ও সংগ্রামের মধ্য দিয়েই মানুষ এই পৃথিবীতে তার বিজয় ঘোষণা করেছে। এ জন্য ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, শ্রেণি ভেদে সকল মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।
সুফিয়া কামাল ১৯১১ সালে বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একজন সফল সংগঠক ও নারীনেত্রী। তিনি ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন এবং সকল আন্দোলন-সংগ্রামে নারীদের অংশগ্রহণ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছেন। স্বাধীন বাংলাদেশে নারীজাগরণ বিশেষ করে নারীদের সম-অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ 'সাঁঝের মায়া', 'মায়া কাজল', 'কেয়ার কাঁটা'। তিনি ১৯৯৯ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
সম্প্রদায়গত সম্প্রীতি বৃদ্ধির লক্ষ্যে কী কী উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে, তার পরিকল্পনা প্রস্তুত কর (একক কাজ)।
১. কর্মের আহ্বানে মানুষ কত দিন হতে চলছে?
ক. সহস্রাব্দকাল
খ. অনন্তকাল
গ. শতাব্দীকাল
ঘ. ঐতিহাসিক কাল
২. কালে কালে মানুষ কীভাবে সমুন্নত হয়েছে?
ক. সম্মিলিত প্রয়াসে
খ. একক প্রয়াসে
গ. সভ্যতার বিকাশে
ঘ. অর্থনৈতিক বিকাশে
উদ্ধৃতাংশ পড়ে ৩ ও ৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও।
(১) একতাই বল
(২) চেষ্টায় সুসিদ্ধ করে জীবনের আশা
৩. উদ্ধৃতির ১ম অংশের সাথে 'সাম্য' কবিতার কোন চরণের মিল আছে?
i. বিপুলা পৃথিবী, প্রসারিত পথ / যাত্রীরা সেই পথে
ii. শতেকের সাথে শতেক হস্ত/ মিলায়ে একত্রিত
iii. বিজয় কেতন উড়ায়ে মানুষ / চলিয়াছে দলে দলে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii
খ. i ও iii
গ. ii ও iii
ঘ. i, ii ও iii
8. উদ্ধৃতাংশের সাথে 'সাম্য' কবিতার কোন ভাবের মিল আছে?
ক. সংগ্রাম
খ. প্রচেষ্টা
গ. সম্মিলিত অবস্থান
ঘ. সাহস
১. অমিত সাহেব একটি পাঠাগার স্থাপনের জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। কিন্তু তাঁর একার পক্ষে এত বিশাল কাজ সম্পাদন কোনোভাবেই সম্ভব হচ্ছে না। তিনি কারও সহযোগিতা নিতে সম্মত নন। পরে গ্রামের সকল শ্রেণির মানুষের সার্বিক সহযোগিতায় পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়। এখন সবাই পাঠাগার থেকে বই সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় জ্ঞান আহরণ করতে পারছে।
ক. 'সাম্য' কবিতায় কোনটির মাধ্যমে জীবন মহীয়ান হয়?
খ. 'সংগ্রামে আর সাহসে প্রজ্ঞা' দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
গ. অমিত সাহেবের চরিত্রে 'সাম্য' কবিতার বৈসাদৃশ্যের দিকটি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. "উদ্দীপকের মূলভাব যেন 'সাম্য' কবিতারই প্রতিরূপ।"- বিশ্লেষণ কর।
ফুলের মেলা পাখির মেলা
আকাশ জুড়ে তারার মেলা
রোজ সকালে রঙের মেলা
সাত সাগরে ঢেউয়ের মেলা।
আর এক মেলা জগৎ জুড়ে
ভাইরা মিলে বোনরা মিলে
রং কুড়িয়ে বেড়ায় তারা
নীল আকাশের অপার নীলে
ফুলের বুকে সুবাস যতো
বুকে-মুখে নেয় মেখে তাই
পাখির কলকণ্ঠ থেকে
সুর তুলে নেয় তারা সবাই।
রাতের পথে পাড়ি যখন,
তারার অবাক দীপ জ্বেলে নেয়।
রোজ সকালের আকাশপথে
আলোর পাখি দেয় ছেড়ে দেয়
সাত সাগরের বুক থেকে নেয়
ঢেউ তুলে নেয় ভালোবাসার।
জগৎ জুড়ে যায় ছড়িয়ে,
যায় ছড়িয়ে আলো আশার।
ভালোবাসার এই যে মেলা
এই যে মেলা ভাই-এর বোনের,
এই যে হাসি এই যে খুশি
এই যে প্রীতি লক্ষ মনের-
কচি সবুজ ভাই-বোনদের
আপনি গড়া এই যে মেলা,
এই মেলাতে নিত্য চলে
আপন মনে একটি খেলা।
সারা বেলাই সেই এক খেলা
গড়বে নতুন একটি বাগান,
অনেক ফুল আর অনেক পাখি
সব পাখিদের আলাদা গান-
তার মাঝেই একটি সুরে
সবারই সুর যায় মিলিয়ে
এক দুনিয়া এক মানুষের
স্বপ্ন তারা যায় বিলিয়ে।
মেলা - মিলন বা একত্র হওয়া। উৎসব বা অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে অনেক মানুষের সমাবেশ। যেমন বৈশাখি মেলা, বই মেলা, কৃষি মেলা, বিজ্ঞান মেলা ইত্যাদি।
'আর এক মেলা
জগৎজুড়ে' - পৃথিবীর সকল শিশু-কিশোরের মিলনের বা একতার উৎসবকে কবি অন্য এক রকমের মেলা বলেছেন।
সুবাস - সুগন্ধ।
নিত্য - রোজ।
'তার মাঝেই
একটি সুরে
……… বিলিয়ে - ভৌগোলিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক কারণে মানুষেরা আলাদা আলাদা সম্প্রদায়ে বিভক্ত হলেও মনুষ্যত্বের দিক থেকে সকল মানুষ এক। সেই এক মিলনের সুরে সবারই সুর মিশে যায়।
শিক্ষার্থীদের মধ্যে নারী-পুরুষের সমতার চেতনা জাগ্রত করা।
পৃথিবীর চারদিকে যদি আমরা দৃষ্টি দিই তবে দেখতে পাই বাগানে ফুলের মেলা, গাছে গাছে পাখির মেলা আর আকাশে তারার মেলা। এ হলো প্রকৃতির জগৎ। অন্যদিকে পৃথিবীর শিশু-কিশোরদের রয়েছে একটা আলাদা জগৎ। আর এটিও একটি মেলার মতো। আকাশের নীলের মধ্যে যে উদারতা রয়েছে, ফুলের মধ্যে যে পবিত্র সুবাস রয়েছে, পাখির গানের মধ্যে যে সুর রয়েছে সবই পেয়েছে শিশু-কিশোররা। প্রতিদিন আকাশ নিঙড়ে যে রোদ ওঠে, সেখান থেকে তারা নেয় জীবনের উত্তাপ, সাত-সাগরের বুক থেকে তারা নেয় ভালোবাসার ঢেউ। তাই তারা বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে দেয় নবীন প্রাণের আশার আলো। কচি সবুজ ভাইবোনদের হাসি-খুশির মধ্যে লক্ষ লক্ষ সবুজ মনের স্নেহ-প্রীতির প্রকাশ ঘটেছে, দেশ-কালের সীমানা ভেঙে তারা অন্তরের ভালোবাসা দিয়ে গড়তে চাচ্ছে একটি সুন্দর জগৎ, সাজানো বাগানের মতো সুন্দর পৃথিবী। এ পৃথিবী হবে সকল মানুষের জন্য একটা অভিন্ন পৃথিবী। পৃথিবীর সকল শিশু-কিশোরের ভাষা এক নয়। তবু সব পাখির গানের মধ্যে যেমন একটা সুরের ঐক্য আছে, তেমনি পৃথিবীর শিশু- কিশোরদের মনের ভাষার মধ্যেও একটা মিল আছে। পৃথিবীর সব মানুষ একতাবদ্ধ হয়ে স্নেহ- ভালোবাসা পূর্ণ একটা সমাজ যদি গড়ে তোলে, তবে এ পৃথিবীর মধ্যে আর কোনো বিবাদ থাকবে না।তখন পৃথিবী হবে একটা দেশ, মানবসমাজ হবে একটা পরিবার। তখন কত সুন্দর হবে এ পৃথিবী!
বাংলাদেশের বিশিষ্ট কবি আহসান হাবীব। তিনি ১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দে পিরোজপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পেশায় ছিলেন সাংবাদিক। তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ হচ্ছে: 'রাত্রিশেষ', 'ছায়াহরিণ', 'সারাদুপুর', 'আশায় বসতি' ইত্যাদি। তাঁর লেখা শিশুতোষ গ্রন্থগুলো বেশ জনপ্রিয়। ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে কবি আহসান হাবীব ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
ক. কবিতাটি নিয়ে একটি আবৃত্তি প্রতিযোগিতার আয়োজন কর।
খ. কবিতাটিতে ব্যবহৃত প্রকৃতিকেন্দ্রিক শব্দগুচ্ছের একটি তালিকা তৈরি কর।
১. রাতের পথে পাড়ি দিতে শিশু কিশোররা কীসের আলো জ্বেলে নেয়?
ক. চাঁদের
খ. তারার
গ. প্রদীপের
ঘ. জোনাকির
২. 'আর এক মেলা জগৎ জুড়ে' বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
i মিলনের মেলা
ii. একতার মেলা
iii. রঙের মেলা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i
খ. ii
গ. i ও ii
ঘ. i, ii ও iii
৩. সুন্দর সকাল। ফুলের সুবাস। রঙবেরঙের প্রজাপতি নবনীকে মুগ্ধ করে। - উদ্দীপকে 'মেলা' কবিতার যে দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে-
ক. প্রকৃতির জগৎ
খ. আরেকটা মেলা
গ. আশার আলো
ঘ. অন্তরের ভালোবাসা
৪. কিশোর মোরা ঊষার আলো আমরা হাওয়া দুরন্ত
মনটি চির বাঁধন হারা পাখির মত উড়ন্ত-
এখানে কিশোরদের 'ঊষার আলোর' সঙ্গে তুলনা করার দিকটি মেলা কবিতার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ,
কারণ শিশু-কিশোরদের-
ক. পাখির গানের সুর আছে
খ. অন্যরকম জগৎ রয়েছে
গ. মনের ভাষা এক ও অভিন্ন
ঘ. আশা ছড়াবার প্রাণশক্তি আছে
১। হেমন্তের এক পড়ন্ত বিকেলে এক বাউল নদীর পাড় দিয়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছেন। এক পাশে নদী। নদীতে ভেসে চলেছে রং-বেরঙের পালতোলা নৌকা। ঝাঁকে ঝাঁকে নানা রকমের পাখি উড়ছে। কোনোটি সাদা, কোনোটি কালো। আর এক পাশে ধানখেত। যতদূর চোখ যায় সবুজ আর সবুজ। এমন মোহনীয় পরিবেশে বাউল তাঁর একতারায় সুর তোলে-
নানান বরণ গাভীরে ভাই একই বরণ দুধ,
জগত ভরমিয়া দেখলাম একই মায়ের পুত।
ক. নীল আকাশে রং কুড়িয়ে বেড়ায় কারা?
খ. 'গড়বে নতুন একটি বাগান'- কথাটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের বর্ণনায় 'মেলা' কবিতার যে বিষয়বস্তুর মিল পাওয়া যায় তার বর্ণনা দাও।
ঘ. 'বাউলের এই গানের মর্মকথাই তো মেলা কবিতার মূলভাব'। যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে দাও।
অক্ষর - শব্দের যে অংশটুকু একবারে উচ্চারিত হয় তাকে অক্ষর বলে। সাধারণ কথাবার্তায় অক্ষর বলতে বর্ণও বোঝানো হয়। এখানে বৃহৎ অর্থে মাতৃভাষা বোঝানো হয়েছে।
নির্ঝর - ঝরনা।
'এই অক্ষর যেন
নির্ঝর ছুটে চলে অবিরাম' - আমরা আমাদের মাতৃভাষায় কথা বলি, লিখি। আমাদের পূর্বপুরুষেরাও তা-ই করতেন। তাই বলা হয়েছে মাতৃভাষা অবিরাম ছুটে চলেছে। মানে মাতৃভাষার মাধ্যমে আমরা নানা কাজ করে বর্তমান থেকে ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে চলেছি।
'যেন কিছু তারা
দিচ্ছে পাহারা আকাশেতে
লিখে নাম' - এক সময়ে আমাদের এই দেশ পরাধীন ছিল। শাসকেরা রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলা ভাষাকে ব্যবহার করার সুযোগ থেকে আমাদের বঞ্চিত করেছিল। কিন্তু তখনকার সচেতন বাঙালিরা এ অধিকার আদায় করে নেয়। সে অধিকার আদায় করার জন্য অক্ষরগুলো যেন নিরবচ্ছিন্নভাবে অনুপ্রেরণার বিষয় হয়ে আছে।
'এই অক্ষরে মাকে
মনে পড়ে' - মায়ের কাছ থেকেই আমরা মাতৃভাষা প্রথম শিখি। তাই অক্ষর বা ভাষার দৃষ্টান্ত দেখলেই মাকে মনে পড়ে যায়।
উপমা - তুলনা।
অপরূপ - -খুব সুন্দর।
নূপুর - পায়ে পরার অলংকার।
মাতৃভাষার প্রতি শিক্ষার্থীদের শ্রদ্ধা ও মমত্ববোধ জাগ্রত করা।
বাংলা অক্ষর বা বর্ণমালা বাঙালি জাতির অনন্য সম্পদ। এই বর্ণমালা বাঙালির প্রাণের সঙ্গে অস্তিত্বের সঙ্গে মিশে আছে। বাংলা অক্ষর বাঙালির চিত্তকে আনন্দে ভরে দেয়। বাঙালিকে করে তোলে স্বপ্নমুখী। বাংলা অক্ষর বাঙালির চোখে দেখা দেয় মায়ের রূপ ধরে। কখনো তার চিত্তে বাজায় সুরের নূপুর।
বাংলা অক্ষর বাঙালির মিলিত সত্তার শ্রেষ্ঠতম উৎস। আমাদের অক্ষরসমূহ আপন-পর সকলকে কাছে টানে, দূর করে দেয় সব বিভেদ। বাংলা অক্ষর বাঙালির বুকে সঞ্চার করে অবারিত আশা। আলোচ্য কবিতাটিতে বাংলা অক্ষর তথা বর্ণমালার প্রতি কবির অবারিত ভালোবাসা ও গভীর শ্রদ্ধা প্রকাশ পেয়েছে।
কবি মহাদেব সাহা ১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দে সিরাজগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। মহাদেব সাহার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হলো: 'এই গৃহ এই সন্ন্যাস', 'অস্তমিত কালের গৌরব', 'টাপুর টুপুর মেঘের দুপুর', 'ছবি আঁকা পাখির পাখা', 'সরষে ফুলের নদী' ইত্যাদি।
ক. তোমার পূর্বে পড়া বাংলা ভাষাবিষয়ক একটি গল্প বা কবিতা অবলম্বনে একটি রচনা তৈরি কর (একক কাজ)।
খ. ভাষা-আন্দোলন নিয়ে রচিত কবিতাসমূহ সংগ্রহ করে একটি দেয়ালিকা প্রকাশ কর (দলীয় কাজ)।
১. এই অক্ষরে কবিতায় কাকে মনে পড়ার কথা বলা হয়েছে?
ক. প্রিয়জনকে
খ. মাকে
গ. দেশকে
ঘ. ভাষাকে
২. 'এই অক্ষর যেন নির্ঝর / ছুটে চলে অবিরাম' চরণদ্বয় দ্বারা কবি বুঝিয়েছেন-
i. মাতৃভাষায় আমরা অতীত ইতিহাস জানি
ii. বর্তমানকে আমরা মাতৃভাষায় বুঝতে পারি
iii. আমরা ভবিষ্যতের স্বপ্নও বুনি মাতৃভাষায়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i
খ. ii
গ. ii ও iii
ঘ. i, ii ও iii
কবিতাংশ পড়ে ৩ ও ৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও:
(১) বাংলার গল্প বাংলার গীত শুনিলে এ চিত্ত সদা বিমোহিত
(২) সুখে দুঃখে তারা এসে মোর পাশে তোষে সদা মোরে মধুর সম্ভাষে
৩. ১ নং কবিতাংশে 'এই অক্ষরে' কবিতার কোন দিকটি প্রকাশ পেয়েছে?
ক. ভাষাপ্রীতি
খ. প্রকৃতিপ্রীতি
গ. মর্ত্যপ্রীতি
ঘ. স্বদেশপ্রীতি
৪. ২ নং কবিতাংশে বক্তব্য নিচের কোন চরণে প্রকাশ পেয়েছে?
i. এই অক্ষরে / ডাকনাম ধরে / ডাক দেয় বুঝি কেউ
ii. এই অক্ষর / আত্মীয়-পর/ সকলেরে কাছে টানে
iii. এই অক্ষরে / মাকে মনে পড়ে / মন হয়ে যায় নদী
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. iও ii
খ. i ও iii
গ. ii ও iii
ঘ. i, ii ও iii
১. আর তাই তো কখনো আমি পড়তে দিই নি ধুলো, এই কালো
এ-কারে আ-কারে
তারা যেন ক্ষেতের সোনালি পাকা ধান, থোকা থোকা
পড়ে থাকা জুঁই।
তোমার জন্য জয় করেছি একটি যুদ্ধ
একটি দেশের স্বাধীনতা।
ক. কঠিন পাথরে কী লেখা হয়?
খ. 'এই অক্ষরে মাকে মনে পড়ে' বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের 'তারা' 'এই অক্ষরে' কবিতার কিসের সাথে তুলনীয়? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. "উদ্দীপকের শেষ দুটি চরণে 'এই অক্ষরে' কবিতার সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবার্থ ফুটে উঠেছে।" উক্তিটির যথার্থতা নিরূপণ কর।
ভাই মরল রংপুরে সেই
রংপুরই তো বাংলাদেশ
নুসরাতেরা আগুন দিল
দোজখ যেন ছড়ায় কেশ।
কওমি তরুণ দাঁড়ায়া ছিল
কারবালারই ফোরাতে
শাহাদাতের আগুন দিয়া
খুনির আরশ পোড়াতে।
পোলা গেছে মাইয়া গেছে
দুয়ার খুইলা রাখছে মায়
ভাই-বইনে আইছে ফিরা
রক্তভেজা খাটিয়ায়।
মরা পুতরে কোলে নিয়া
মা ফিরছে অটোতে
রোজ পোলারে খোঁজে অহন
আইডি কাডের ফটোতে।
চক্ষু দিল পা-ও দিল
সারা বাংলায় কাফন শ্যাষ
গোরস্থানে কান্দে শহিদ-
পঙ্গু যেন হয় না দ্যাশ।
মায়ের ওড়না বাইন্ধা মাথায়
পুত মিছিলে হারাইল প্রাণ
ঘাস কান্দে গাছ কান্দে কান্দে
বাঁশের গোরস্থান।
খোদার আরশ কাঁইপা ওঠে
শুইনা বাপের হাহাকার
একটা মানুষ মারার লাগি
কয়টা গুলি লাগে ছার?
লাশের ভিতর লাশ ডুইবা যায়
রাতের হাওয়ায় কিসের লাল
সারা আকাশ ছাইয়া আছে
কোন শহিদের গায়ের শাল?
চিরকালই স্বাধীনতা
আসে এমন রীতিতে
কত রক্ত লাইগা আছে
বাংলাদেশের সিঁথিতে।
শাহাদাত - শহিদ হওয়া; ধর্ম, ন্যায় ও সত্য রক্ষার বা প্রতিষ্ঠার কাজে নিহত হওয়া।
আরশ - সর্বব্যাপী খোদার আসন।
খাটিয়া - ক্ষুদ্র খাট, সাধারণত যা দড়ি দিয়ে ছাওয়া হয়।
আইডি কার্ড - পরিচয়পত্র।
গোরস্থান - কবরস্থান; সমাধিক্ষেত্র।
সিঁথি - মাথার চুল দুইভাগে বিন্যস্ত করে যে সরু রেখা সৃষ্টি হয়।
বাংলাদেশের মুক্তি আন্দোলনের পরিক্রমায় 'জুলাই ২০২৪'-এ মর্ম অনুধাবন করতে পারা।
হাসান রোবায়েতের 'সিঁথি' কবিতায় সাম্প্রতিক বাংলাদেশের এক নির্মম ও মর্মন্তুদ অভিজ্ঞতার প্রকাশ ঘটেছে। শিক্ষার্থী-জনতার অভ্যুত্থান ২০২৪-এ বিজয়ী হয়ে বাংলাদেশের মানুষ নতুনভাবে মুক্তির স্বাদ পেয়েছে; কিন্তু অগণিত মানুষের আত্মদানের বিনিময়ে রচিত হয়েছে সে মৃত্যুর গাথা। শাসকপক্ষের মরণ-কামড় উপেক্ষা করে প্রাণ দিয়েছে আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা। মুখের ভাষার উচ্চারণরীতি আর বাগবিধি ব্যবহার করে কবি এক রক্তস্নাত বাংলদেশের অন্তরঙ্গ ছবি এঁকেছেন। তাতে দেশের কল্যাণ আর মানুষের মুক্তির প্রত্যয়ও ঘোষিত হয়েছে। কবিতাটিতে বাংলাদেশের মানুষের মুক্তি সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ২০২৪-এর অভ্যুত্থান এক নতুন বিজয়গাথা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
হাসান রোবায়েত ১৯৮৯ সালের ১৯ই আগস্ট বগুড়া জেলার সোনাতলা থানার অন্তর্গত পশ্চিম তেকানী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মো. মোস্তাফিজুর রহমান এবং মায়ের নাম ফারহানা রহমান। তিনি বগুড়ার পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সরকারি আজিজুল হক কলেজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে পড়াশোনা করেছেন। উল্লেখযোগ্য কবিতার বই 'মীনগন্ধের তারা', 'মাধুডাঙাতীরে', 'মুসলমানের ছেলে', 'ছায়াকারবালা' ইত্যাদি। 'মেঘের ভিতর হরিণ ঘুমায়' তাঁর কিশোর কবিতার বই।
ক. 'সিঁথি' কবিতাটিতে যেসব আঞ্চলিক শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে তার একটি তালিকা কর।
খ. তোমার শ্রেণিতে কবিতাটি আবৃত্তির জন্য একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন কর। (শিক্ষকের সহায়তায়)
১. গোরস্থান শব্দের অর্থ কী?
ক. জীবনাবসান
খ. সমাধিক্ষেত্র
গ. দোজখ
ঘ. বাঁশঝাড়
২. 'চিরকালই স্বাধীনতা
আসে এমন রীতিতে'- কথাটির অর্থ কী?
ক. স্বাধীনতা অর্জন সহজ নয়
খ. স্বাধীন দেশের মানুষ হওয়া
গ. স্বাধীনতা অর্জনের পথে অনেক চড়াই-উৎরাই থাকে
ঘ. স্বাধীনতা বড়ই সুখকর বিষয়
উদ্দীপকটি পড়ে ৩ ও ৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও।
মূর্তি (২) নাম বললে চিনতে পারবেন না। হাইকোর্টের কেরানি ছিলাম। তখন টের পাইনি। ফুসফুসের ভেতর দিয়ে চলে গিয়েছিল। এপিঠ-ওপিঠ। বোকা ডাক্তার খামোখা কেটেকুটে গুলিটা খুঁজে খুঁজে হয়রান হয়েছে। জমাট রক্তের মধ্যে ফুটো নজরেই পড়েনি প্রথমে।
নেতা : তুমিও এই দলে এসে জুটেছ নাকি?
মূর্তি (২): গুলি দিয়ে গেঁথে দিয়েছেন। ইচ্ছে করলেও আল্ল্গা হতে পারব না।
৩. সংলাপটিতে সিঁথি কবিতার যে দিকটি ফুঁটে উঠেছে, তা হলো-
i. অন্যায়ের প্রতিবাদে আত্মদান
ii. বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ
ন্যায়-অন্যায়ের কোনো পার্থক্য নাই
নিচের কোনটি সঠিক
ক. i
খ. ii
গ. i ও ii
ঘ. i, ii ও iii
৪. সংলাপের মূলভাব নিচের কোন চরণে পাওয়া যায়?
ক. একটা মানুষ মারার লাগি কয়টা গুলি লাগে ছার
খ. কওমি তরুণ দাঁড়ায়া ছিল কারবালারই ফোরাতে
গ. খোদার আরশ কাঁইপা ওঠে শুইনা বাপের হাহাকার
ঘ. সারা আকাশ ছাইয়া আছে কোন শহিদের গায়ের শাল
প্রথম অংশ
তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা
তোমাকে পাওয়ার জন্যে
আর কতবার ভাসতে হবে রক্তগঙ্গায়?
আর কতবার দেখতে হবে খাণ্ডবদাহন?
দ্বিতীয় অংশ
সেই তেজী তরুণ যার পদভারে
একটি নতুন পৃথিবীর জন্ম হতে চলেছে -
সবাই অধীর প্রতীক্ষা করছে তোমার জন্যে, হে স্বাধীনতা।
ক. শাহাদাত বলতে কী বোবা?
খ. 'গোরস্থানে কান্দে শহিদ-পঙ্গু যেন হয় না দ্যাশ।' এখানে কীসের আশঙ্কা ব্যক্ত হয়েছে?
গ. উদ্দীপকের প্রথম অংশটিতে 'সিঁথি' কবিতায় ছাত্র-জনতার আত্মদানের বিষয়টি কীভাবে ফুটে উঠেছে তা বর্ণনা কর।
ঘ. উদ্দীপকের দ্বিতীয় অংশটি 'সিঁথি' কবিতার মূল বক্তব্য। -ব্যাখ্যা কর।
common.read_more